IQNA

কুরআন কি? / ৩৫

একটি বই যা মানুষকে বিচ্যুতি থেকে দূরে রাখে

0:02 - October 17, 2023
সংবাদ: 3474517
তেহরান (ইকনা): যেকোনো পথ খুঁজে পেতে হলে, মানুষকে তার চেনা পথেই যাত্রা করতে হবে, যাতে করে তার গন্তব্যে সে সহজেই পৌঁছাতে পারে। যে ব্যক্তি পথ চেনা বলে দাবি করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে চেনে না, সেক্ষেত্রে সে শুধু গন্তব্যে পৌঁছায় না, বরং এই পথে হাঁটতে হাঁটতে সে ক্লান্ত হয়ে যায়! আল্লাহর দিকে এক পদক্ষেপ নেওয়ার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে পবিত্র কুরআন।

ইমাম আলী (আ.) পবিত্র কুরআনের যে বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন তার মধ্যে একটি হল, যদি কেউ এই গ্রন্থ অনুযায়ী তার জীবনকে ধাবিত করে তাহলে সে কখনই বিচ্যুত হবে না। নাহজুল বালাগার ১৩৩তম খুতবায় ইমাম বলেন: :« وَ لَا يَخْتَلِفُ فِي اللَّهِ، وَ لَا يُخَالِفُ بِصَاحِبِهِ عَنِ اللَّهِ মহান আল্লাহ সম্পর্কে তার আয়াত ভিন্ন নয়, এবং  এর (কুরআনের) সঙ্গীকে কখনই আল্লাহ থেক বিমুখ করবে না।
এই কুরআনকে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নাযিল করা হয়েছে বলে যুক্তি দেখানো হয়েছে যেগুলোর একটি হল: কুরআনএমন একটি কিতাব যার কোন আয়াতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই এবং কুরআনে যদি এই ধরনের পার্থক্য পাওয়া যেত, তাহলে এই বইটি আর আল্লাহ্‌র কিতাব হিসেবে থাকত না। 


أَ فَلا یَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ وَ لَوْ کانَ مِنْ عِنْدِ غَیْرِ اللّهِ لَوَجَدُوا فیهِ اخْتِلافاً کَثیراً

তবে কি তারা কুরআন সম্বন্ধে চিন্তা-ভাবনা করে না? যদি তা আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও নিকট হতে হত তবে তারা এতে বহু অসংগতি পেত। 
সূরা নিসা, আয়াত: ৮২
আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী নাহজুল বালাগার ১৩৩ নম্বর খুতবার দ্বিতীয় অংশের তাফসীরে লিখেছেন: এই বাক্যটি " وَلاَ يُخَالِفُ بِصاحِبِهِ عَنِ اللهِ; “তোমার সঙ্গীকে আল্লাহ থেকে বিচ্যুত করো না” ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, কুরআনের কোন আয়াতই একজন মানুষকে সত্যের পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেয় না, বরং তাকে তার স্রষ্টার দিকে নিয়ে যায়। যে কোরআনকে আঁকড়ে ধরে সে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না এবং যে এর আশা করে সে নিরাশ হবে না।
যাইহোক, ইমামের বক্তৃতার দ্বিতীয় অংশের জন্য একটি উদাহরণ রয়েছে এবং এটি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন রয়েছে: ইতিহাস জুড়ে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যে, কুরআনের ক্বারি ও হাফেজরাও জাহান্নামী হয়েছে এবং বিভ্রান্তিতে মারা গেছে।
কুরআন নিজেই একটি পথপ্রদর্শক, কিন্তু ইমামকেই কুরআনের মাধ্যমে মানুষকে পথ দেখাতে হবে। কুরআন এমন একটি গ্রন্থ যেটি সম্পর্কে মানুষের অতটা জ্ঞান নেই, একমাত্র মাসুম ইমামগণের এই ঐশ্যি গ্রন্থ সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। সুতরাং এটিই ইমামের কুরআনের উপলব্ধি, যা পথপ্রদর্শক এবং ত্রাণকর্তা উভয়ই।
নবী করিম (সা.) সাকলাইনের বিখ্যাত হাদীসে এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এবং কুরআন ও ইতরাতকে (আহলে বাইত) দুটি জিনিস বলে মনে করেন। যদি কেউ এগুলিকে আঁকড়ে ধরে তবে সে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না।


إِنِّی تَارِکٌ فِیکمْ أَمْرَینِ إِنْ أَخَذْتُمْ بِهِمَا لَنْ تَضِلُّوا- کتَابَ اللَّهِ عَزَّ وَ جَلَّ وَ أَهْلَ بَیتِی عِتْرَتِی أَیهَا النَّاسُ اسْمَعُوا وَ قَدْ بَلَّغْتُ إِنَّکمْ سَتَرِدُونَ عَلَیَّ الْحَوْضَ فَأَسْأَلُکمْ عَمَّا فَعَلْتُمْ فِی الثَّقَلَینِ وَ الثَّقَلَانِ کتَابُ اللَّهِ جَلَّ ذِکرُهُ وَ أَهْلُ بَیتِی‏...


আমি তোমাদের মধ্যে দুটি অতি ভারী জিনিস রেখে যাচ্ছি যেগুলোকে হুজ্জাত হিসেবে ব্যবহার করলে কখনোই পথভ্রষ্ট হবে না: আল্লাহর কিতাব এবং আহলে বাইত অর্থাৎ যারা আমার পরিবার। হে মানুষ শোন! আমি তোমাদের বলেছিলাম যে তোমরা “হাউজে কাউসারে” প্রবেশ করবে। তখন আমি রেখে যাওয়া এই দুটি মূল্যবান সম্পদ অর্থাৎ আল্লাহর কিতাব এবং আমার আহলে বাইতের সাথে তোমারা কিরূপ আচরণ করেছ সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করব।"

captcha