বার্তা সংস্থা ইকনা: মুসলিম জাহানের ক্ষমতা দখলকারী মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান দামেস্কে মৃত্যু বরণ করার পর পরই এ ঘটনা ঘটে। এ দাবি ছিল হযরত ইমাম হাসানের (আ) সঙ্গে মুয়াবিয়ার স্বাক্ষরিত সন্ধি-চুক্তির লঙ্ঘন। ১৯ বছর আগের ওই চুক্তিতে বলা হয়েছিল মুয়াবিয়া তার পুত্রকে খলিফা হহিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে না ও এমনকি পরবর্তী শাসক কে হবেন তা নিয়ে মাথা ঘামানোরও কোনো অধিকার তার থাকবে না। মুয়াবিয়া নিজেকে খলিফা বলে দাবি করতে পারবে না বলেও ওই চু্ক্তিতে লেখা হয়েছিল। পার্সটুডে
মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর দামেস্কে পিতার দীর্ঘকালের ইচ্ছা অনুযায়ী খিলাফতের নতুন দাবিদার হয় ইয়াজিদ। সে মদিনায় নিযুক্ত মুয়াবিয়ার গভর্নর ওয়ালিদ ইবনে উৎবাকে নির্দেশ দেয় ইমাম হুসাইন (আ)'র কাছ থেকে যেন তার আনুগত্য আদায় করা হয়। ইমাম হুসাইন (আ) রক্তপাত ও উত্তেজনা এড়াতে পবিত্র মদিনা ছেড়ে পবিত্র মক্কায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু পবিত্র মক্কায়ও ইয়াজিদের পক্ষ থেকে বার বার আনুগত্যের জন্য চাপ আসতে থাকায় ইমাম শান্তির শহর হিসেবে খ্যাত পবিত্র মক্কার ভূমি নিরপরাধ ব্যক্তিদের রক্তে রঞ্জিত হতে পারে বলে শঙ্কিত হন।
অন্যদিকে ইয়াজিদি-শাসনের বিরুদ্ধে বিতৃষ্ণ ও বিক্ষুব্ধ চপলমতি কুফাবাসীরা প্রকৃত ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার বিপ্লব তথা মুক্তি-আন্দোলন শুরু করতে ইমামের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাজার হাজার চিঠি পাঠায়। তারা সম্ভাব্য ইয়াজিদি দমন-অভিযানের মোকাবেলায় ইমামকে সেখানে আশ্রয় ও তাঁকে সহায়তা দেয়ার প্রস্তাবও দেয়।
ফলে পবিত্র মদিনা ছেড়ে মক্কায় আসার পাঁচ মাস পর পবিত্র হজের প্রাক্কালে হজযাত্রীর ছদ্মবেশধারী ইয়াজিদের গুপ্ত-ঘাতকদের হামলা এড়াতে এবং কুফাবাসীদের মুক্ত করার জোরালো আহ্বানে সাড়া দিতে এই মহান ইমাম মক্কা থেকে ইরাকের কুফার দিকে রওনা হন।
অবশেষে কুফাবাসীদের বেশিরভাগ মানুষেরই বিশ্বাসঘাতকতার প্রেক্ষাপটে ইমাম হুসাইন (আ) ও তাঁর প্রায় ১০০ জন সঙ্গী ইসলামের মর্যাদা রক্ষা করতে এবং এ ধর্মের প্রকৃত পুনরুজ্জীবনের স্বার্থে চরম বীরত্ব দেখিয়ে ইয়াজিদ বাহিনীর বিশ-ত্রিশ হাজার সেনার সঙ্গে অসম যুদ্ধে লিপ্ত হন। ইয়াজিদি বাহিনীর নৃশংসতা ও পৈশাচিকতার শিকার হয়ে ইমাম হুসাইন (আ) ও তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রায় ২০ সদস্যসহ ৭২ জন অনুসারী সঙ্গী শাহাদত বরণ করেন।