IQNA

‘হিজাব পরার মাধ্যমে ক্ষমতা প্রকাশ করতে পারি যে, আমি কি হতে চাই’

21:00 - October 22, 2017
সংবাদ: 2604134
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সারাহ মুসার জন্ম আমেরিকার ওহিও অঙ্গরাজ্যে এবং সেখানেই তিনি বেড়ে ওঠেন। তার মা কোরিয়ান এবং বাবা ফিলিস্তিনি।

বার্তা সংস্থা ইকনা: ১৭ বছর বয়সে তিনি মাথায় হিজাব পরার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও তার এ সিদ্ধান্তে তার খ্রিস্টান মা কিছুটা মর্মাহত হন।
সারাহ মুসা এখন ৩৩ বছর বয়সের একজন পরিপূর্ণ যুবতী। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কের একটি তৈরি পোশাক হাউজের ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত আছেন।
কিন্তু সারাহ’র স্বপ্ন ইসলামি পোশাক নিয়ে তার নিজস্ব লেবেল তৈরি করা। তার এই ‘বিনয়ী সুদর্শন ফ্যাশন’ ধর্মপ্রাণ নির্বিশেষে সব মানুষের জন্য তৈরি হবে বলে তিনি জানান।
তার দশ বছরের কর্মজীবনে তিনি রালফ লরেন, আন্না সুয়ি, ক্যারোলিনা হেরেরার মতো বিখ্যাত সব পোশাক হাউজে কাজ করেছেন। এখন তিনি ‘ক্লাব মোনাকো’তে কাজ করছেন। এখানে তিনি একজন সিনিয়র টেকনিক্যাল ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন।
মার্জিত এই তরুণী এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি সুন্দর পোশাক তৈরি করছি এবং নারীরা তা নির্বাচন করতে পারবে যে, কিভাবে তারা এটা পরবে।’
তিনি কিশোরী বয়সে হিজাব পরার সিদ্ধান্ত নেন। তার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে তার খ্রিস্টান মায়ের তিন বছর লেগেছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘এই বয়সে অধিকাংশ কিশোরীরা শুধু টাইট-ফিট পোশাক পরতে চান। কিন্তু আমেরিকান হাই স্কুলের একজন ছাত্রী হিসেবে হিজাব পরা আমার জন্য খুব সহজ ছিল না।’
সারাহ বলেন, ‘এই সব পোশাক হাউজগুলো আমাকে বলেছে, আপনাকে মেকআপ ব্যবহার করতে হবে।আপনাকে ত্বক দেখাতে হবে। আপনাকে আপনার চুলে কালার করতে হবে ইত্যাদি, ইত্যাদি। সেখানে এখনো এই বিলিয়ন ডলারের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ‘আপনি কখনোই যথেষ্ট পারফেক্ট নন’।’
তিনি বলেন, ‘আমি হিজাব পরার মাধ্যমে আমি আমার ক্ষমতা প্রকাশ করতে পারি যে, আমি কি হতে চাই।’
রক্ষণশীল পোশাক কিংবা হিজাব পরা নিয়ে আমেরিকান সমাজে বির্তক থাকলেও বিশ্বের মুসলিম নারীদের অধিকাংশই এটা পরতে পছন্দ করেন বলে তিনি জোর দিয়ে বলেন।
২০ বছর বয়সে সারাহ মুসা তার নিজের ‘বিনয়ী ফ্যাশন’ লেবেল ‘হায়া’ চালু করেন। কিন্তু খুব শিগগিরই এটিকে এক পাশে রেখে তিনি তার অধ্যয়নে মনঃসংযোগ দেন।
শহরের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত ফ্যাশন হাউসে কিছু দিন কাজ করার আগে তিনি নিউইয়র্কের মর্যাদাপূর্ণ টেকনোলজি ফ্যাশন ইনস্টিটিউট থেকে ডিগ্রি নেন।
কিন্তু তিনি এখনো তার নিজস্ব লেবেল পুনরায় আরম্ভ করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিন বছর আগে দেশব্যাপী ইসলামি পোশাক তৈরির একটি প্রতিযোগিতায় তিনি পুরস্কার লাভ করেন।
যদিও আমেরিকান সমাজের চেয়ে নিউইয়র্কের জনগণ ফ্যাশন শিল্পের ব্যাপারে অধিক উদারমনস্ক। তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনো হিজাবকে বাঁকা চোখে দেখা হয়। তিনি জানান, একবার এক চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে নিয়োগকারী তার মাথার হিজাবের কারণে তাকে বের করে দেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিমভীতিতে হিজাব পরতে ভয় পান কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ওহিও এলে নিজেকে তারকা অনুভব করি। আমি হিজাবে ভীতু নই।’
কিন্তু তার মাথার হিজাবে কেউ কেউ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াও দেখিয়েছে। তিনি জানান, একদিন একজন নারী তার কাছে এসে তাকে বলেছিলেন, ‘তোমার হিজাব দেখতে খুব সুন্দর’। আরটিএনএন
captcha